পঞ্চগড়ে গম কাটা-মাড়াই শুরু
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৮ অপরাহ্ন | সারাদেশ

মোঃ লিহাজ উদ্দিন (পঞ্চগড় ) :
চা পাথর সমৃদ্ধ পঞ্চগড়ের সমতলে গমের বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। কৃষকের কাংখিত ফসল ঘরে তুলতে ইতিমধ্যে গম কাটা শুরু হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এবার অধিক লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে গমের সোনালি শীষ। কোথাও কোথাও গম কাটা হচ্ছে হারভেস্টার মেশিনে। আবার কোথাও কৃষক নিজেই গরম কাটছেন। গম কেটে মাঠ থেকেই ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এবার গমের বাম্পার ফলন হওয়ায় বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ মণ গম উৎপাদন হবে বলে ধারণা কৃষকদের। গমের ন্যায্যমূল্য পাওয়া গেলে এ ফসলে অধিক লাভবান হবেন বলে প্রত্যাশা করেছেন কৃষকরা। তাদের ধারণা বেশি লাভ হওয়ায় গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে বেশি। গম চাষে সেচ, সার, কীটনাশক ও বালাইনাশকসহ তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না বলে খরচও অনেক কম। আর কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করা যায়। এছাড়াও গমে পোকামাকড়ের আক্রমণও তেমন একটা হয় না। চলতি বছর গমের ভালো দাম পাবেন বলে আশা করেছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের বোদাপাড়া গ্রামের কৃষক হাসান ও জাহাঙ্গীর সহ কয়েকজন গম চাষি জানান, এ বছর আবহাওয়া ঠিক থাকায় গমের আবাদ ভালো হয়েছে। তাদের প্রত্যাশা, বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ মণ গম উৎপাদন হবে।
আটোয়ারী উপজেলার কিসমত রসেয়া গ্রামের গম চাষি ইব্রাহিম বলেন, ‘গতবারের মতো এবারও গম চাষ করেছি। এ বছর দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। গম কাটা শুরু হয়েছে। আশা করছি ভালো দাম পাব। ন্যায্য দাম পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে গমের আবাদ করার কথা ভাবছি।’
তেঁতুলিয়া উপজেলার বদিনাজোত এলাকার কৃষক আজিজ বলেন, এক একর জমিতে গম চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। গম চাষাবাদে তেমন রোগ-বালাই নেই। তবে ইঁদুরের উপদ্রব আছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ গম ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে খরচ বাদ দিয়ে একরে ২০ হাজার টাকা লাভ হবে।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে , চলতি মৌসুমে জেলায় গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার ৩০০ হেক্টর। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০হাজার ৫শ ৯১ মেট্রিক টন। পঞ্চগড়ের ৫টি উপজেলায় এ মৌসুমে বারি ৩০ ও ৩৩ জাতের গম বেশি চাষাবাদ হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ গম গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত গমের জাত ১, ২ ও ৩ উৎপাদন ও ফলন ভালো হয়েছে। তবে বারি ৩৩ জাতের গমের বাপ্পার ফলন হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল মতিন বলেন, ‘জেলায় এবার গমের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে গম কাটা শুরু হয়েছে।
আশা করছি বাজার গমের দাম ভালো গেলে কৃষকরা লাভবান হবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে উন্নতজাতের বারি গমের বীজ, সার ও বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও, চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।’